ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয় তার ইতিহাস ও তাৎপর্য
ঈদুল আযহা হল মুসলমানদের জন্য একটি সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল
আযহা কেন পালন করা হয় তার বিশেষ কারণ ও তাৎপর্য রয়েছে। ঈদুল আযহা কে আমরা
কোরবানির ঈদ বলেও চিনি। ঈদুল আযহার দিনে প্রধান কাজ হল কোরবানি দেওয়া। মহান
আল্লাহতালার সন্তুষ্টির জন্য এই দিনটি পালন করা হয়।
মুসলমান জাতির দুটি উৎসবের মধ্যে একটি হল ঈদুল আযহা। সাধারণত জিলহজ
মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে এ দিনটি পালন করা হয়। এই উৎসব শুধু
আনন্দের নয় বরং একটি গভীর আত্মত্যাগের ইতিহাস ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার
প্রতিফলন। আজকের এই ব্লগে আমরা ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয় তার ইতিহাস ও
তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করব।
পেজ সূচিপত্রঃ ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয়
- ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয়
- ঈদুল আযহা কবে পালিত হয়
- ত্যাগ ও মহিমার ঈদ ঈদুল আযহা
- ঈদুল আযহা আমাদের যে শিক্ষা দেয়
- ঈদুল আযহার দিনে যেসব আমল করবেন
- ঈদুল আযহা সম্পর্কে হাদিস কি বলে
- ঈদুল আযহা পালন করার ইতিহাস
- ঈদুল আযহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
- ঈদুল আযহার দিনে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়
- লেখকের মন্তব্যঃ ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয়
ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয়
ঈদুল আযহা হল মুসলমানদের একটি ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল আযহা কে কোরবানির ঈদ ও
বলা হয়। মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ঈদুল আযহা পালন
করা হয়। ঈদুল আযহা মূল ইতিহাস হলো হযরত ইব্রাহিম আঃ এর আত্মত্যাগের
কাহিনী কে কেন্দ্র করে। হযরত ইব্রাহিম আঃ আল্লাহ তায়ালার আদেশ পালনের
উদ্দেশ্যে তার প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল আঃ কে তার পূর্ণ সম্মতিতে
কোরবানি করতে উদ্যত হন। মক্কার নিকটবর্তী স্থানে এই মহান কুরবানীর
উদ্যোগ নেওয়া হয়।
আল্লাহ তায়ালা তার নিস্টার উপর সন্তুষ্ট হয়ে তার পুত্রের বদলে একটি
পশু কোরবানি করতে আদেশ দেন। তারপর তার পুত্রের বদলে একটি পশু কোরবানি
হয় তখন থেকে মুসলিম জগতে সর্বোত্ত আত্মত্যাগের প্রতীক হিসাবে পশু কোরবানির
রীতি প্রচলিত রয়েছে। ঈদুল আযহার দিনে আল্লাহ তায়ালার
উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা হয় এবং এবং তা তিন ভাগ করে বিতরণ করা
হয়।
ঈদুল আযহা কবে পালিত হয়
পবিত্র ঈদুল আযহা কোন মাসে পালিত হয় বা কবে পালিত হয় তা অনেকেরই অজানা।
অনেকেই ঈদুল আযহার সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্চ করে
থাকে। তাহলে চলুন জেনে নিই আরবি কোন মাসে ঈদুল আযহা পালিত হয়। আরবি
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সাধারণত জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের
মধ্যে ঈদুল আযহা পালিত হয়।
আরও পড়ুনঃ
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার ১০ টি উপায়
জিলহজ মাস হলো আরবি মাসের ১২ তম মাস। বাংলাদেশের সাধারণত সৌদি আরবের
ঈদের পরের দিন ঈদুল আযহা পালন করা হয়। আগে থেকেই ঈদুল আযহার নির্দিষ্ট
কোন দিন ঠিক করা সম্ভব নয়। কারণ ঈদুল আযহা সম্পূর্ণ চাঁদ দেখার উপর
নির্ভরশীল। তাহলে এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ইংরেজি কোন মাসে
ঈদুল আযহা পালিত হবে। আর এখন থেকে হিসাব করলে জিলহজ মাসের ১০ থেকে
১২ তারিখ হচ্ছে জুন মাসের ৬ থেকে ৮ তারিখ। যেহেতু আরবি
মাসগুলো ২৯ অথবা ৩০ তারিখে হয়ে থাকে এবং তা চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে
তাই সঠিক সময়ের কম বেশি হতে পারে।
ত্যাগ ও মহিমার ঈদ ঈদুল আযহা
ঈদুল আযহা মুসলিম উম্মাহর একটি ধর্মীয় পবিত্র উৎসব। যা জিলহজ মাসে পালন করা
হয়। এই দিনটি ত্যাগ ও মহিমার শিক্ষা নিয়ে আসে। ঈদুল আযহার দিনে পশু কোরবানি
করা হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা্র সন্তুষ্টির জন্য প্রিয় বস্তু ত্যাগ করা
আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গভীর তাৎপর্য বহন করে। হযরত ইব্রাহিম আঃ
আল্লাহর উদ্দেশ্যে তার পুত্র সন্তানকে কুরবানী দিতে প্রস্তুত হন। আর তখন থেকে
কুরবানীর সূচনা হয়।আল্লাহ তার অনুগত্য দেখে তার ছেলের পরিবর্তে পশু কোরবানির
বিধান দেন।
ঈদুল আযহার মাধ্যমে মুসলমানদের আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, আত্মত্যাগ
ও সহানুভূতির শিক্ষা অর্জন করে। সমাজে ধনী গরিবের মধ্যে
ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়। কোরবানির গোশত তিন ভাগ করার পরে একভাগ নিজের জন্য
রেখে বাকি দুইভাগ আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মাঝে বন্টন করে আমরা সামাজিক সাম্য
প্রতিষ্ঠা করে থাকি। এই ঈদে আল্লাহর আদেশ পালনই জীবনের মূল উদ্দেশ্য।
আত্মত্যাগ ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে কোন কিছু ত্যাগ করতে আমরা সব সময়
প্রস্তুত থাকি। তাই বলা যায় ঈদুল আযহা হলো ত্যাগ ও মহিমান্বিত
একটি দিন।
ঈদুল আযহা আমাদের যে শিক্ষা দেয়
ঈদুল আযহা আমাদের যে শিক্ষা দেয় সেটি হল কোরবানির উদ্দেশ্যে নিছক পশু জবাই
করে গোশত খাওয়া নয় বরং এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি
লাভের জন্য নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর পথে সমর্থন করা। আল্লাহর
যেকোনো হুকুম নিজে মাথা পেতে নেওয়া।
এই দিনটি মূলত হযরত ইব্রাহিম আঃ এর আল্লাহর আদেশ পালনে নিজের পুত্র হযরত
ইসমাইল আঃ কে কোরবানি দেওয়ার চেষ্টার স্মরণে পালন করা হয়।
ঈদুল আযহার মূল শিক্ষা হলো আত্মত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য
প্রদর্শন। এ উৎসব আমাদের শিক্ষা দেয় নিজের প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর
রাস্তায় উৎসর্গ করার মানসিকতা গড়ে তোলা।হযরত ইব্রাহিম আঃ যে ধৈর্য্য ও
বিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছেন তা মুসলিম জীবনের জন্য একটি বড় আদর্শ।ঈদুল
আযহা ধনী গরিবের সকলের মাঝে সমান আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ করে
দেয়।কোরবানির মাধ্যমে ধনী ব্যক্তিরা গরিবদের সাহায্য করে থাকেন এতে করে
সমাজে সহমরমিতা বৃদ্ধি পায়।
ঈদুল আযহার দিনে যেসব আমল করবেন
ঈদুল আযহা দিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত ও মুস্তাহাব আমল রয়েছে। যেগুলো
পালন করলে একজন মুসলমান ঈদের প্রকৃত তাৎপর্য ওজন করতে পারে। প্রথম নিয়ম হলো
ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে পবিত্রতা অর্জন করার জন্য গোসল করার সুন্নত।যা
শরীর ও মনকে পরিচ্ছন্ন রাখে ও ঈদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে
বিবেচিত।
তারপর সুন্দর ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বৈশাখ পরিধান করা।
ঈদের দিনে এত সুন্দর ব্যবহার করতেন এটি সুন্নত এবং সৌন্দর্যের একটি
বহিঃপ্রকাশ। ঈদুল আযহার দিনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হল আল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এই তাকবীর ঈদ উল আযহার দিনে ফজরের নামাজ
থেকে আমল শুরু করা।
ঈদুল আযহার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হল ঈদের নামাজ আদায়
করা। ঈদের দিনের নামাজ আদায় করা সুন্নত। ঈদের নামাজ জামাতের সাথে
খোলা মাঠ বা ঈদগাহে আদায় করা উত্তম। এতে করে বেশি মানুষের সাথে
সাক্ষাৎ হয় এবং অনেকের সাথে সালাম বিনিময় হয়।
যাদের উপর কোরবানির
ওয়াজিব তারা ঈদের নামাজের পর কোরবানি করবেন ঈদের দিন। এটি ঈদুল আযহার
অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ত্যাগের প্রতীক। এই দিনে অসহায় মানুষের
পাশে দাঁড়ানো। ঈদের দিন যেহেতু আনন্দের দিন তাই সকলের সতর্ক থাকা উচিত
কোন গুনাহে লিপ্ত না হওয়া।
ঈদুল আযহা সম্পর্কে হাদিস কি বলে
ঈদুল আযহা সম্পর্কে মহানবী সাঃ বলেন কোরবানি করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান
ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব।মহানবী সাঃ আরও বলেন যে ব্যক্তি কোরবানি করার
সামর্থ্য থাকার পরও কুরবানী করেনা সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। এই হাদিস
থেকে বুঝা যায় ঈদুল আযহা শুধু একটি আনন্দের দিন নয় বরং এটি ত্যাগ তাকওয়া ও
আনুগত্যের দিন। নামাজ আদায় করা, কোরবানি করা, দারিদ্রদের সাহায্য
করা ঈদুল আযহার মূল লক্ষ্য। মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি
লাভের উদ্দেশ্যে ঈদুল আযহা দিনটি পালন করা হয়।
আরেক হাদিসে বলা রয়েছে আদম সন্তানের কোন কাজ আল্লাহর নিকট কোরবানির
দিনে পশু কোরবানি করার চেয়ে অধিক প্রিয় নয়। কোরবানির পশু কিয়ামতের দিন
শিং, খুর ও পসম সহ আসবে আর অবশ্যই কোরবানির রক্ত পড়ার আগে তা আল্লাহর
কাছে গৃহীত হয়। কাজেই মন খুশি করে কোরবানি করা উচিত। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আঃ কোরবানির দিন ফজরের নামাজ থেকে শুরু করে প্রতিটি নামাজের পর
তাকবির পাঠ করতেন। তাই ঈদুল আজহার দিনে কোরবানি করা ও ঈদের দিনে
আনন্দ করা সুন্নত।
ঈদুল আযহা পালন করার ইতিহাস
ঐতিহাসিকভাবে ঈদুল আযহার সূচনা ঘটে হযরত ইবরাহীম আঃ এর এক মহান পরীক্ষার
মাধ্যমে। তিনি স্বপ্নে আল্লাহর নির্দেশ পান তার সবচেয়ে প্রিয় সন্তানের
কোরবানি দেওয়ার জন্য। তিনি বুঝেছিলেন এটি কোন সাধারণ স্বপ্ন নয় বরং
আল্লাহপাকের একটি আদেশ। আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তিনি সেই আদেশ পালন
করতে প্রস্তুত হন এবং ইসমাইল আঃ কে তা জানালে তিনি দেরি না করে বলেন হে পিতা
আপনি যে আদেশ পেয়েছেন তাই করুন।
ইনশাল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের একজন
হিসেবে পাবেন। যখন ইব্রাহিম আঃ তার প্রিয় পুত্রকে কুরবানী করার
জন্য প্রস্তুত হলেন তখন আল্লাহ তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন এবং
ইসমাইল আঃ এর পরিবর্তে একটি জান্নাতি দুম্বা পাঠিয়ে দেন যা কোরবানি
করা হয়। এভাবে শুরু হয় কোরবানির ঈদ যা আজও মুসলিমরা ঈদুল আযহার দিনের
স্মরণে পালন করে থাকে।
ঈদুল আযহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ঈদুল আযহা মুসলিম উম্মাহর একটি সবচেয়ে পবিত্র ধর্মীয় উৎসব। যা প্রতি বছর
আরবি মাস অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয়। এটি কুরবানী ঈদ নামেও
পরিচিত। ঈদুল আযহার মূল শিক্ষা হলো আত্মত্যাগ তাকওয়া ও
মানবিকতা। আল্লাহতালা সন্তুষ্টির জন্য নিজের প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করার
মানসিকতা হযরত ইব্রাহিম আলাই সাঃ যেমন তার পুত্র ইসমাইল আঃ কে
কুরবানী দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। এই ঘটনা মানুষের মনে ত্যাগের চেতনা জাগ্রত
করে।
আরও পড়ুনঃ দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার উপায়
আল্লাহতালা বলেন আল্লাহর কাছে পৌঁছানো গোশত হলো তোমাদের তাকওয়া। এই
আয়াত প্রমাণ করে যে কোরবানির আসল উদ্দেশ্য হল আল্লাহর প্রতি ভক্তি ও ভয়।
ঈদের দিনে কুরবানী দিয়ে নিজেদের আত্মাকে আল্লাহর পথে নিবেদিত করা। তারা শেখে
প্রকৃত ঈমানদার হতে হলে আল্লাহর আদেশ কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ঈদুল
আযহা হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যার হজ পালন করে তারা কোরবানি দিয়ে
এ দিনের তাৎপর্য আরো গভীরভাবে উপলব্ধি করেন।
কোরবানির পশুর মাংস আত্মীয়
স্বজন প্রতিবেশী ও গরিবদের মাঝে বন্টন করা হয় এর মাধ্যমে সমাজের সহানুভূতি
ভ্রাতৃত্ব গড়ে ওঠে ঈদুল আযহা দিনে ধনী গরিব সবাই একসাথে ঈদের আনন্দ
ভাগ করে নেয়। এই দিনে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে কিভাবে নিজের ইচ্ছা ও
লালসার বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর পথে চলা যায়। কোরবানির মাধ্যমে আমরা যেন
নিজের ভেতরের অহংকার হিংসা লোভ দূর করে পশুকে কোরবানি দিতে পারি সেটাই ঈদুল
আযহার আসল গুরুত্ব ও তাৎপর্য।
ঈদুল আযহার দিনে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়
ঈদুল আযহার দিনে কিছু করণীয় রয়েছে যেমন ঈদের দিনে গোসল করা সুন্নত তাই
আমাদের ঈদের নামাজের আগে গোসল করে শরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ভালো পোশাক
পড়তে হবে। ঈদের দিনে মহানবী সাঃ আতর সুরমা ব্যবহার করতেন। তাই
আমরা ঈদের নামাজের আগে আতর সুরমা লাগিয়ে নামাজ পড়তে যাব। খোলা জায়গা
ও জামাতের সাথে নামাজ পড়া সুন্নত ও উত্তম।
রাসুল সাঃ এক পথে গিয়ে
অন্য পথে নামাজ পড়ে আসতেন তাই আমাদের উচিত এক পথে গিয়ে অন্য পথে ফিরে
আসা। ঈদের দিন প্রতিটি নামাজের পরে তাকবির বলা সুন্নত। ঈদের মূল আমল হলো
কোরবানি সামর্থ্যবানদের জন্য এটি ওয়াজিব। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ
করে আত্মীয় স্বজন গরিব ও নিজের পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা উত্তম।
ঈদুল আযহার দিনে কিছু বর্জনীয় বিষয় কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে বা
কোরবানির দিলে ঈদের নামাজের আগে কিছু না খাওয়া উত্তম কোরবানির মাংস খেয়ে
শুরু করা সুন্নত। ঈদের নামাজের আগে পশু জবাই করলে তা গ্রহণযোগ্য
নয়। হাদিসে বলা রয়েছে যে ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করলে সে কেবল নিজের
জন্য মাংস জবাই করছে। তাই আমাদের উচিত ঈদের নামাজ আদায় করে আসার পর
কোরবানি দেওয়া।
কোরবানি করার সময় পশুর সাথে কোন নিষ্ঠুর আচরণ করা ঠিক
নয় ভালোভাবে পশুর যত্ন নেওয়া ও সহজে দোয়া পাঠ করে জবাই করা উচিত।
ঈদের দিনে অহংকার করা গরীবদের হেয় করা মারাত্মক গুনাহ তাই এসব কাজ করা যাবে
না। ঈদের দিনে হারাম গান বাজনা বা অসভ্যতা করা যাবে না। ঈদের দিন হল
আনন্দের দিন তাই সবাইকে আনন্দের সাথে দিনটি পালন করতে হবে।
লেখকের মন্তব্যঃ ঈদুল আযহা কেন পালন করা হয়
উপরের লেখা পড়ে নিশ্চয় আমরা জানতে পেরেছি ঈদুল আযহা কেন পালন করা
হয়। ঈদুল আযহার দিনটি কেবল আনন্দ করার নয় বরং আল্লাহর আদেশ পালন
করে ত্যাগ, তাকওয়া ও মানবিকতার শিক্ষা গ্রহণ করার দিন। হযরত
ইব্রাহিম আঃ যখন আল্লাহর নির্দেশে তার প্রিয় সন্তানকে কোরবানি করতে
উদ্দিষ্ট হন তখন তিনি মানবজাতিকে শিখিয়ে গেছেন আল্লাহর আদেশের সামনে কোন
কিছুই প্রিয় নয় এমনকি নিজের সন্তান ও নয়।
আজ আমরা যখন ঈদুল আযহা পালন করি তখন মূলত সেই মহান ত্যাগ ও বিশ্বাসের চেতনাকে
স্মরণ করে করি। পশু কোরবানি একটি প্রতিক মাত্র। আসল কোরবানি হচ্ছে
আমাদের নিজের ভেতরের অহংকার, হিংসা, লোভ, খারাপ কাজগুলোকে আল্লাহর সন্তুষ্টির
জন্য ত্যাগ করা। এই দিনটি আমাদের সেখায় সত্যিকার ঈমানদার হতে হলে শুধু
মুখে নয় কাজে প্রমাণ করতে হবে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা।
মুক্তা আইটিনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url